লেখার টেবিল
ফাদার রিকবি প্রায় প্রতি সপ্তাহে আমাদের পাড়ায় আসতেন গল্প করতে- তাঁর আঠাশ ইঞ্চি ফনিক্স সাইকেলে চেপে। মাঠে দাঁড়িয়াবান্ধা আর ফুটবল খেলতে থাকা ছেলেমেয়েরা তাকে দেখতে পেলেই হইহই করে সাইকেলের পেছনে জড়ো হতো। কেউ কেউ আরও বিরক্ত করতো- ক্যারিয়ার টেনে ধরতো পেছন থেকে, সাইকেলে উঠতে চাইতো। ফাদার কোনমতে তাদের ম্যানেজ করতেন। …
বার্ধক্যজনিত কারণে কালীকে বিদায় করতে হলো। ওর যৌবনগত হয়েছে, হাঁটতে, চিবুতে কষ্ট হয়-চোখেও বোধহয় কম দেখে- আমাদের পরিবারের তখন তেমন বিলাসীতা করার সময় নয় যে একটি উপযোগিতাহীন গৃহপালিত প্রাণীকে বৃদ্ধাশ্রমের আয়োজনে বসিয়ে রাখি। বিশেষত, যখন বর্ষা মৌসুমে খড় একদম পাওয়া্ যায় না। শহরে বসে গরু পালনের রেওয়াজ তখন উঠে যাচ্ছে- …
গায়ে ঘাম। খেলার মাঠ থেকে ফিরেছি ধুলোবালি একাকার করে। কাদামাখা খালি পা। ঝরের বেগে ঘরে ঢুকেছি, উদ্দেশ্য মাটির কলসের ঠান্ডা জল খাবো। কিন্তু ঘরের ভেতর ন্যাড়াচৌকিতে পা তুলে যে লোকটি বসে আছেন হাফহাতা গেঞ্জি লুঙ্গি পড়ে, হাতপাখায় বাতাস খাচ্ছেন, তাকে দেখে কুন্ঠিত হলাম। মা রাগত স্বরে কিকি যেনো বলছেন, সেসবের …
১.সামনের রিকসার পেছনে টিনের ব্যাকভিউতে হাতে আঁকা বেঢপ-বুক লাস্যময়ী নারী ভঙ্গীমাটা যে আসলে তারই প্রতিকৃতি আঁকার প্রচÐ প্রয়াশ- তা বুঝতে শাবলীনের বেশ সময় লাগলো। শুটিংয়ে যাবার এই সময়টা ঢাকা শহরের জ্যামে আটকে গত রাতের রাত জাগার ধকল আর অনেকখানি মানসিক চাপকে গোপন করতে করতে সে অনেকটাই হাঁফিয়ে উঠেছিলো বলে মাথাটা …
চরিত্রসমূহ:গাঁজরপেপেকাঁচামরিচমিষ্টি কুমড়োকচুশাকটমেটোস্বামীস্ত্রী তথ্য সংগ্রহকারী (পুরুষ) তথ্য সংগ্রহকারী (নারী) ————————— সব্জিরা সকলে হাত ধরাধরি করে নাচতে নাচতে মঞ্চে এসে গান ধরবে: চিনতে তোমার কোনদিনও হয়না যেনো ভুল (২)সতেজ করি দেহ- আবার রোগ করি নির্মূল (মোরা) (২) মা ও শিশুর চোখের জ্যোতি, বাড়াই-দেহে আনি পুষ্টি অতি (২) ভিটামিনে ভরপুর আমরা ভারী ইউজফুল …
১৯৬০ সালের দিকে দক্ষিণ ফ্রান্সের সাগরপারের এক ছোট্ট শহরে সমারসেট মমের সাথে সাক্ষাতের এক সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। এই গল্প আমার সেই অনুভূতি- যা আমার জীবনের এক অভাবিত কথপোকথোনে রূপ নিয়েছিলো। – লেখক। ইউরি নাগিবিনঅনুবাদ : তুহিন সমদ্দার যখন তাঁর সাথে আমার দেখা হয় ইতোমধ্যে তিনি তখন কলম গুটিয়ে নিয়েছেন। …
জনশ্রুতি আছে, রাজা মন্ত্রহারীর আমলে জলদস্যুতা কিছুটা লোপ পেয়েছিল। তিনি ছিলেন রায়মঙ্গল নদীর মতোই বদমেজাজী। বন্দী ডাকাতদের চোখ ধারালো কিরিচ দিয়ে শ্রেফ গেঁথে নিয়ে উপড়ে ফেলা হতো রাজার সম্মুখে। সেই উৎপাটিত চোখ তার সখের চিতা-শাবক দিয়ে তিনি ভক্ষণ করাতেন ! নিকষ অন্ধকার ভেঙে যখন কেবল ভোরের অপার্থিব ম্লানিমা চরাচরে …
বিশ্বাস, আস্থা, শরীর, প্রেম, ভালোবাসা, স্নেহ… এর বাইরেও আরও একটা জিনিস আছে মানুষ আর মানুষীর ভেতরে। কী সেটা, তা এই সময়ের মানুষেরা এখনো জানে না। তবে কেউ কেউ জানে মনে হয়। সেটার কোনো নাম নেই এখন। ভবিষ্যত পৃথিবী তাকে কোনো একটা নাম দেবে হয়তো। সে এক অদ্ভুত সুন্দর ব্যাপার হবে …
তুহিন সমদ্দার। গল্পগ্রন্থ ২০০১ একুশে বইমেলা।