অশেষ প্রপাত

শ্রীমতি রাকাকে প্রথম দেখার সাথে সাথেই আমি তীব্র যৌন উত্তেজনা বোধ করি, তা আজ থেকে শ্রেফ দুবছর আগের কথা যখন তিনি পুরুষের লোভীদৃষ্টি সহ্য করার ক্ষমতা দখল করে উঠেছেন। এবং দিন,আমার মনে আছেরাতে স্বপ্ন আর আধো জাগ্রত তন্দ্রার মধ্যে আমি তার সোনালী শিশুসাপের মতো লাজুক ব্রেসিয়ারের চিকন ফিতে বাঁ কাঁধ থেকে নামিয়ে ফেলি একথা আশ্চর্য রকম সত্য যে, তারপর থেকে যখনই আমি রাকার সামনা সামনি হয়েছি ঠিক ততোবারই তিনি আমার দিকে একবার তাকিয়েই সাথে সাথে তার বাঁ কাঁধে হাত রেখে কি এক অজানা আশঙ্কায় কিছু একটা খুঁজেছেন। মাঝে মাঝে আমার এমতো মনে হয়েছে যে কোন পুরুষ মৌমাছির সাথে আমার বিশেষ মিল রয়েছে এবং আমি জীবীত থাকবো ঠিক ততোদিন,ততোক্ষণযতোদিন, পর্যন্ত রাকার সাথে আমার একটি উড়ন্তকালীন সঙ্গমক্রিড়া না সম্পন্ন হবে। এবং এই বোধের পরিসমাপ্তি না ঘটানোর জন্য আমি কেবলই শ্রীমতি রাকার উষ্ণ উত্তুঙ্গ নীলাভ স্তনবোঁটার চারপাশের বাদামী বলয়ে আমার নির্লিপ্ত জিহ্বার ঘর্ষণ তুলে Ž কম্পাঙ্কের শীৎকারধ্বনি শোনার প্রতীক্ষায় এক একটা কালোকৃষ্টি রাতকে পার করে দিতাম।

আজকে আমরা এহেন ধারণায় উপনীত হয়েছি যে রাণী মৌমাছি প্রতিদিন গড়ে দুহাজার থেকে তিন হাজার পর্যন্ত ডিম দেয়। মৌমাছির জড়োসড়ো (পষঁংঃবৎবফ) হয়ে থাকা তাদের জীবনের স্বভাব আর জড়োসড়ো হয়ে থাকার পিছনে কাজ করে রাণীর শরীরের নির্যাস (য়ঁববহ ংঁনংঃধহপব).এই নির্যাস একধরণের ø স্নহজাতীয় è, যা রানীর চোয়াল গ্রন্থিতে তৈরী হয় এবং এটি শ্রমিকদের ডিম্বাশয়কে সক্রিয় হতে দেয়না। রাণীর মৃত্যুতে এই নির্যাসের অনুপস্থিতির জন্য শ্রমিকরা সেচ্ছামৃত্যু অথবা দ্র নতুন রাণী তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েআমরা যারা একসাথে আড্ডা দিতাম, তাদের সদস্য সংখ্যা ছিলো পাঁচ। আমরা প্রত্যেকেই রাকাকে কল্পনায় সঙ্গম করেছিলাম কিনা এই তথ্য উদ্ঘাটন অন্ততঃ আমার জন্য সম্ভব ছিলোনা। তবে আমি এটুকু নিরীক্ষণ করেছি যে আমার মতোই ওদের কাউকে কাউকে দেখে রাকা তার ডান কাঁধে, সুগোল স্তনপ্রান্তে, নাভিমণ্ডলের আবছায়া গভীরতায় কিংবা উরুর জ্যামিতিতে সচকিত সজাগ হাত রেখে নিজেকে নিঃস্প্রহ রাখতেন। রাকাদেবীর ওড়নার ঝিলিমিলি তখন মাটিতে লুটিয়ে যেত আর ধর্ষকামী বাতাসে তার চুল, তার ভরাট শরীরের ইতিউতি অবিন্যাস্ত হতো। আমাদের মধ্যে একজন রাকার প্রেমেও পড়েছিল হয়তো। ঈশ্বর জানেন, আমরা কি তবে তার প্রেমের অসম্মান করেছিলাম? অথচ আমরাই সর্বাগ্রে রাকাকে আবিষ্কার করেছিলাম কবিতা উৎসবে। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, যেদিন তিনি আসরে এলেন সেদিন থেকেই এতোসব কাব্যচর্চার একটি সঠিক মানে পাওয়া গেলো। তিনি বেশ হাসিখুশিমার্কা আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে সেচ্ছায় আমাদের হাতে বন্দী হলেন। কিংবা মুক্ত হলেন। মুক্ত হলেন এই বলে যে, বাড়ীতে তার বন্দী জীবন। একা একা ভালোলাগেনা। সারাক্ষণবলার সাথে সাথে তার চোখের মাঝে উঁকি দিলে যেন করুণা আর কষ্টের মিশেল দেয়া একধরণের নিশ্চয়তাবোধ দেখা যাবে। ভাগ্যিস তার নিঃসঙ্গতা ছিল। ভাগ্যিস সে নারী! অথচ কতো পুরুষ নিঃসঙ্গ আছে, আমরা তা কদাচিৎ খেয়াল করি। রাকাদেবী তার ঊরু অধরের ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে মস্তষ্কের এক বন্ধনহীন উদ্দাম মাঠে যুবতী শিশুর মতো আমাদের সাথে নিয়ত খেলা করে যেতে থাকেন। সেখানে তার স্তন, আহা স্তন! তার যোনী যোনীরোম তার বর্তুল নিতম্ব তার কিন্কিনে কণ্ঠস্বর তার থর বেঁধে ওঠা তলপেটের নধর ব্যাপ্তিকেবল আকুতি আর প্রশয় জানায়। যেমন হাত বাড়ালেই বৃষ্টি, পা বাড়ালেই ঘাসতেমনি কল্পনায় তার কাছে আমরা কিংবা আমাদের কাছে তিনি আপন হয়ে ওঠেন। কিন্তু তার নিভাঁজ শাড়ীর সীমাবদ্ধতা নিয়তই রবাসী দ্বীপের বাসিন্দার মতো আমাদের বিছিন্ন করে রাখে। ফলে সেই মায়া এড়ানো একরকম অসম্ভবই হয়ে ওঠে। আমরা কি সত্যিই মায়া কাটাতে চাই। আমরা চাই মুক্তি। আমরা চাই কল্পনার অবশেষ রেহাই। তাই আমরা থবদ্ধ হয়ে উঠি। জড়োসড়ো আড্ডায় কেবল রাকা নামটিই ধ্বনিময় হতে থাকে। অবশেষে আমরা জানলাম, তিনি ক্রিয়েটিভ আর্টের ওপর একটি গবেষণাধর্মী কাজ করার জন্য মাঠে নেমেছেনআমাদের সাহায্য দরকার। আমাদের সাহায্য দরকার? হায়, আমাদের সাহায্য দরকার।  আমাদের …! আমরা…. সাহায্য….. দরকারকী যে সাহায্য দরকার তার, সেসব কখনোই বলেননি তিনি। কালো শেভ্রলে থেকে তিনি নামতেননামার সময় পায়ের অনেকটা বৈভব তিনি আমদের দান করতেন। কাশ্মিরী চিকেনের কাজ করা পেটিকোটের ঝালর দেয়া তার নিটোল  পদযুগলের গোলাপী সুষমা আহাহঠাৎ হঠাৎ তিনি হাজির হতেন আমাদের আড্ডায়। একমাত্র তিনি। আমাদের পক্ষসিঞ্জিরের ইথার কণায় একমাত্র রমণী মৌমাছি! কাসুন্দ দেয়া কাঁচা আমের আচার খেতে খেতে গল্প করার মতো গল্প করতেন। মাঝে মাঝে ঈর্ষার আগুনে ঘৃতাহুতি দেবার মতো তিনি আমাদের মধ্যে কোন একজনকে বেছে নিয়ে সকলের সামনে দিয়ে রিকসায় বেড়াতে বেরুতেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে কেউই তার সাথে উড়ন্তকালীন সঙ্গমে সক্ষমতা লাভ করতে পারেনি। তবু তার আমাদের সাহায্য দরকারকেনো যেকেনো যে…..কী সাহায্য করবো আমরা?

এই তথ্য আমাদের যারপরনাই ব্যতিব্যস্ত করেছিল সত্য, তবু কোথায় যেন এক শ্রমিক মৌমাছির নিঃস্প্রহতা আমাদের গ্রাস করে নিলো। আমি ক্রমাগত হস্তচালনে নিজেকে ক্ষয় করতে করতে রাকাদেবীকে রাণী মৌমাছি হিসেবে স্বীকৃতি দিলাম। রাকাদেবী তখন থেকে আমাদের হয়ে গেলেন। যখন তখন আমরা তার ফ্ল্যাটে হাজির হতাম। একদিন নিজস্ব প্রয়োজন দেখিয়ে আমি তাদের টয়লেট ব্যবহার করেছিলাম। গোলাপী টাইলস্ আর মানানসই প্রতিটি স্যানিটারী গুডস আমাকে ভিন্ন এক ইমেজিক জগতে নিয়ে গিয়েছিল বিধায় আমি দিব্যচোখে দেখতে পাŽিছলাম শ্রীমতির নির্লোম সবুজ শরীরের এখানে ওখানে ইতস্ততঃ সাবানের ফেনাসমহ হিংসুটে শাওয়ারের জলেনাভিকুণ্ডের স্তম্ভ পেরিয়ে ফাটল বেয়ে নেমে যাচ্ছছ মেঝেতেঝাঁঝালো এমোনিয়াকে সঙ্গী করে….

রাকাদেবী ঐদিন কোন খয়েরী শাড়ীতে নিজেকে অনাবৃত করেছিলেন বলে আমাদের মধ্যে একজন সেই সন্ধ্যাতেও বুড়িগঙ্গায় ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব করেন। তিনি ছিলেন পোস্ট মর্ডানিস্ট লিখিয়েদের অন্যতম। তার কাছে নারী মানে ঘণীকৃত(পড়হপবহঃৎধঃবফ) আনন্দের উৎসার বা মজা; যার যৌনআÍ ভাঙতে হলে নিসর্গের অতি কাছে ছুটে যেতে হয়। সেদিন অবশ্য আমাদের বুড়িগঙ্গায় যাওয়া হয়নি,এটুকু মনে আছে। আর তারপর প্রায় বছর খানেক যাবৎ রাকা আমাদেরকে তার মিষ্টিপনা দুঃসাহস বিস্মিত চাহনীর কনডমে আবৃত করে রেখেছিলেন। আমরা কখনোই তার নগ্ন শরীরে øস্নহ পদার্থের èত্ব ঘোষণা করতে না গেলেও নিজেদের মধ্যে একটি চাপা আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাতাম যে, এই রাকার স্খলনে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য! ফলে স্বভাবতঃই আমরা বিকল্প চিন্ত করতে থাকি। আমার এটুকু মনে আছে, যে আঁকিয়ে সঙ্গীটি রাকার প্রেমে পড়েছিল, সে একটি চমৎকার ন্যুড তৈরী করে শরীরীণীর মুখে একটি রাণী মৌমাছির অবয়ব ফুটিয়ে তুলেছিল!

আর যে বন্ধুটি কবিতাকে ভেবেছিলেন জীবনেরবিচ্ছছদেরঅনিবার্য শিল্পীত সুষমাতিনি হঠাৎ করে বলা নেই কওয়া নেই একদিন কিকরে যেন মরে গেলেন। ঈশ্বর ওহে ঈশ্বর, তিনি বুঝেছিলেন এই মায়া এক আশ্বর্য কূহক? কিন্তু তারপরে রাকার ভেতরে যেন Žছলতার তেজ আরও বেশী বিকিরিত হতে লাগলো। পাফিন সম্রাজ্ঞী আমাতেহুলার মতো রোজরাতে একজন কাফ্রির সহিত অঙ্কশয়ানের পর ঊষাকালে তাকে ত্রিমূরবিদ্ধ করে হত্যা শেষে তার রূপ যে রকম নবধারায় ফুটে উঠতো…. আমাদের রাকা  তার উন্মাতাল প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায়, মাঝে মাঝে সন্ধ্যাত্তোর আড্ডাতেও নন্দনতত্ত্বের নর্মদায় অবগাহন করতে চাইতেন। আমাদের সাথে। আমরা গভীর জীবনবোধ সঞ্জাত অভিজ্ঞ মনীষীর মতো এন্তার কথাশ্রমে প্রত্যেকেই নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রতিভাত করতে চাইতাম। আমাদের চাদ্দিকে তখন ইথার কণার বাষ্পঘণীভূত হতো। যেন আমার এই যুক্তিময় Žচারণ এইমাত্র শুধুই তার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হলো। কী আমরা ঘাঁটিনি বলতে পারেন? রিল্কে থেকে দেরিদা, লু ্যন থেকে টুটুওলা, পটচিত্র থেকে খাজুরাহোর সঙ্গমকলাসবই আমরা অকাতরে তাকেই উৎসর্গ করেছি। তার বিনিময়ে মাঝে মাঝে চাপা শাসানির মতো তার হিসহিসে চাহনী আর মৃত কল্লোলীনীর বিবর্ণ বুকের মতো খাতপ্রবণ পিঠ, লো কাট ব্লাউজের গভীর ক্লিভেজ থেকে Žচারিত ওহ্ মাদক রহস্য ছাড়া তেমন কিছুই জোটেনি। মাঝে মাঝে সে আনমনা হয়ে উঠতো। বলতো জীবনকে সে নানাভাবে উল্টেপাল্টে চেখে নেবে। আমরাতো তাই চাইতাম। তার চেয়ে কমই। চাইতাম, তিনি অন্তত আমাদের তাকে উল্টেপাল্টে চেখে নিতে দিক। তার চন্দনগন্ধা লাবণ্যের নর্দমায় আমরা শুদ্ধিøানের জন্য কতো কতো দুপুর অভিমানে না খেয়ে থেকেছি!

এরই মাঝে একদিন লুটেরার মতো লড়াকু চেহারার ছেলেটি এলো। রাকা নিরুত্তাপ ভঙ্গীমায় তার সাথে পরিচিত হলো। কিন্তু তার চোখআমি তীক্ষচোখে খেয়াল করেছিশৃঙ্গার রসে পরিপ্লুত হয়ে যায়। অবশেষে সে তার বিয়ের আগেই গর্ভবতী হয়ে গর্ভস্খলনের মাধ্যমে ছেলেটির প্রতি তার মোহস্খলন ঘটিয়েছিলএমন একটি উদ্ভট সম্ভাবনায় আমাদের কেউ কেউ বুঁদ হয়ে পড়ে। আড্ডায় ভাঙন শুরু হয়। যে কবিটি মরে গিয়েছিল, সে আবার ফিরে আসে এবং রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যায় লেখালেখিতে। আমিও হয়তো তার প্রতি একধরণের অধিকারবোধে ভুগতাম। তাই লড়াকু ছেলেটিকে খুন করার প্রবল বাসনা নিয়ে প্রতিরাতে ঘুমুতে যেতাম। ঘুমের মধ্যে একাধিক মৌমাছির পক্ষসঞ্চালনের রিম্ঝিম্ মাথার একটি অংশের স্থায়ী বাসিন্দায় রূপ নিয়েছিল। সেই মাইগ্রেনরূপী অস্বাভাবিকতার মাঝেও মনে হতো, লড়াকু ছেলেটি রাকা, আমার রাকাদেবীকে শৃঙ্গারে শৃঙ্গারে উন্মুক্ত করে দিচ্ছছ। তার স্ফীত স্তনচুড়োয় একটি পুরুষ তর্জনীর মেধাবী প্রতিভা আমাকে ঘুমোতে দিতোনা। ফ্রক পড়া সমতলবক্ষা ছোট্ট রাকাকে আমি দেখিনি। রজঃপূর্ব রাকার দস্যিপনা আমার অজ্ঞাত। তবু আধো জাগরণে একটি কৃতার্থকণ্ঠ ডেকে ওঠে, “আঙ্কেল, ওই উঁচুতে আর একটা পেকেছে।দৃশ্যকল্পে ছিপছিপে অনতিকিশোরীটি দেখিয়ে দেয় থোকা থোকা জামরুলের ঝাঁক। আমি কি তবে র্বজন্ম লাভ করেছি?

তবু দিন দিন আরও আবেদনময়ী আরও আকর্ষক নারীটি আমাদের ভেতরে আলোড়ন তুলতে ব্যর্থ হয়। তার লড়াকু সঙ্গীটি যখন বাহু খামচে নিজের সম্পত্তির মতো এক হাতে বেড় দিয়ে রাকাকে নিয়ে দম্ভে চলে যায়, আমরা তখন পেয়াঁজ মরিচ মাখানো মুড়ি চিবোতে চিবোতে তাড়িয়ে তাড়িয়ে তার মমতা উপলব্ধি করি। হঠাৎ খবর আসে একদা এক টুরিস্ট স্পটের সুশোভন নৌবিহারে গিয়ে রাকা আর তার লড়াকু চেহারার সঙ্গীটি যখন সঙ্গমপর্বতের চুড়ান্তসীমায় যৌথ আরোহণ করছিলেনতখন ক্ষীপ্ত বীর্যের মতো স্থানীয় শান্তি প্রতিষ্ঠার সোল এজেন্সির সভ্যগন তাদের ওপর চড়াও হয়। লড়াকু ছেলেটি জেরার মুখে মেনীবিড়ালের মতো মিউঁ মিউঁ করে উঠলে সভ্যগন তার লিঙ্গ বিভাজনে রত হয় এবং প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকগুলো রাকার প্রায়নগ্ন ছবি ছাপিয়ে সাংবাদিকতার প্রতিশ্রতি দেশের শৃখলার অবনতির বাস্তবতা প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তারা অবশ্য চরিত্রবান সেই জনগোষ্ঠীর কিংবা এককালের লড়াকু অধুনা মিউঁ মিউঁ ছেলেটির ছবি ছাপা থেকে নিজেদের বিরত রাখে।

বহুদিন হয়ে গেলো রাকা আমাদের কাছে মৃত। তার মুখের মেচেতা এখন স্পষ্ট। মেদের আধিক্য ধ্বস নামিয়েছে শাণিত সৌন্দর্যের। কিংবা হয়তো আগেই তা ছিল, আমাদের চোখে হয়তো ধ্বস নেমেছে এতোদিনে। আঁকিয়ে বন্ধুটি বেশ আছে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান চিত্রকর হিসেবে। মোবাইল আর মোবিলউভয়ের অপচয়ে সে এখন প্রতিষ্ঠিত। আমি একটি নন্প্রফিটেবল অর্গানাইজেশনে চাকুরী করতে করতে দেখছি দেশটা ক্রমে গরীব হয়ে যাচ্ছছ! ক্রমাগত…. আমাদের দেখা হয় আড্ডা হয় কালেভদ্রে। সপ্তাহের বাজার আর লেটনাইট টকশো আমাকে বহমান আনন্দ দান করে। মৃত কবি বন্ধুটির কাব্যালোচনা সাময়িকীর পাতায় কখনো আন্দোলিত করে আমাকে। কখনো গভীর রাতের সজ্জায় র্ণীর শয়নপূর্ব কেশবিন্যাস দেখতে দেখতে মৌমাছির রিম্ঝিম্ ছাপিয়ে একটি কণ্ঠ মাঝে মাঝে বিভ্রম ছড়ায়আঙ্কেল আঙ্কেল ওই উঁচুতে আর একটা পেকেছে

রাকাদের এখনো নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে আড্ডায়। এই রাকা কামিজ পড়ূয়া। স্তনে ও জঘায় প্রবল। খিল্খিল্ হাসির দমক সইতে না পেরে ওড়না বেচারা কাঁধ থেকে মাটিতে গড়িয়ে পড়ে। আর বুকের উন্নাসীক বৃন্তদুটি পুরুষদের দৃষ্টিসীমায় ঝাঁঝালো আমেজ ছড়ায়। ক্রিয়েটিভ আর্টের ওপর গবেষণামূলক কাজ করার ইচ্ছা আছে বলে একঝাঁক অনতি তরুন যুবামণ্ডলী তার তার চারপাশে নিয়তই পুরুষ মক্ষিকার পক্ষসিঞ্জির তোলে। এই রাকাকে তরুণদল রাকাদেবীর মতো কামনা প্রত্যাশী। যদিও একদিন সেও যাবে আস্তাবলে ঘোটক সন্ধানে। আমি রিকসায় যেতে যেতে আমাতেহুলার খ্রী খ্রী লাস্যধ্বনি শুনি আর ভাবি মক্ষিকার যৌথ  ঝাঁকে কেবল একটিই রানী মৌমাছির থাকার অধিকার কেনো?

না  কা ২০ শে আগস্ট৯৫