কবিতা

শালিখ

ছেলেটা দেখছে একটা শালিখ বারান্দাতে-

একপা বাড়ানো চৌকাঠে আর এক পা ঠেকানো

শালিখ তোমার শেকলে রয়েছে মরচে জড়ানো!

 

শঙ্খের মতো সাদা রাত নামে কনভেন্ট রোডে

জমাট পসরা লুট হয়ে যাক শালিখের খোঁজে।

নবদিগন্ত নবসুর ভাসে নীল নবঘনে-

হাইড্রান্ট খোলা- জল পড়ে যায় অনবরত।

 

ছেলেটা দেখছে বারান্দা আছে শালিখটা নেই-

পয়ার জমেছে বারান্দা জুড়ে শালিখ ছাড়াই!

 

 

৩১ জানুয়ারী, ২০২১

সেন্ট্রাল রোড, ঢাকা।

paint, splash, paint splatter

কেঁদোবাঘেশ্বরী

ঘোতম মেরে তোমার পাশে

ভামবেড়ালের মতো

চুপচাপ বসে থাকবো ভালো।

কোনো কথা বলবো না, খালি

চুমু খাবো ঠোঁটের কাপে

চুমুক দেবো স্তনগেলাশে তোমার !

হা হা, চুরি করে ভেজে আনা

জানা বা অজানা

রহস্যলহরী তুমি আস্তভাজামাছ

বেড়াল যেমন শুঁকে দেখে

মধ্যেমধ্যে-

খায় না কিন্তু

তোমার শরীর ইতিউতি

রহস্যগোলাপ।

– দেখতে পাচ্ছি মোটকা একটা

বেড়াল বসে আছে!

তার লেজটা মোটা ফুলে আছে

ফুলঝাড়ুদের নানাপ্রকার শোভা-

আর বেড়ালবাবুমশাইয়ের

একটা কানের অর্ধেকটা কালো!

তুমি কেঁদোবাঘেশ্বরী যবে

অন্ধকারে বেসেছিলে ভালো

একটা আস্তভাজামাছ

ম ম করছে- রহস্যমাখানো!

mosaic, fish, tile

কুয়াশা

কুয়াশায় বেবশ হয়ে

পথের পাশে

অবহেলায় ফুটেছে ফুলকলি!

সেই একরত্তি ফুলের কাছে তোমার কথা বলি।

ছুটে এলো মন্দ্র বাতাস-

বাতাসে তার সুবাস ছড়ায় কতো-

অবহেলায় ফুটতে পারতো

ফুলকলিরা যতো-

তারা সবাই নিকেশ হলো

এক লহমায়

কুয়াশাদের মতো!

daisy, grass, dew
১৫-১-২০২১ কাতলামারি গ্রাম, গজারিয়া, গাইবান্ধা।

মিউটেশন

            পাহাড় কেটে

      পথ তৈরি করেছে মানুষ- মানুষ কেটে

  তৈরি হয়েছে রেলরাস্তা

আর রেলগাড়ি চলে গেলে

মনে হয় পুরো পাহাড়টাই

   ধ্বসে পড়ছে

       বিধাতার

            মাথার

                ওপর!

 

             জলকে

        কিভাবে বিশুদ্ধ করতে হয়

  আমরা জেনেছি, নারীশরীরের অনাবিল সুষমা

শতখন্ডে বিভক্ত করে, কী করে বিজ্ঞাপনে লাগাতে হয়,

  ছোট ছোট বৃক্ষশিশুকে

        তৃণভোজীদের উদ্যমী জিহ্বা থেকে

           রক্ষা করতে

         দিতে শিখেছি

   কাঁটাগাছের বেড়া।

সেইসব কাঁটাগাছ

শহরের আনাচে কানাচে

   বাড়তে বাড়তে এখন সুঠাম ফ্লাটবাড়ির

       রান্নাঘর পর্যন্ত

    উঁকি দিচ্ছে। তাই

ডিনারে

 প্রতিদিন

   আস্তচাঁদের ওমলেট না হলে

      শহরবাসীর

         এন্টাসিড কেনার

              ধুম পড়ে যায়!

 

 

 

 

২৬/৫/২০০০

 

mountain, moon, sky

কাঁচপুর ব্রীজ দেখার আগে

কাঁচপুর ব্রীজ পার হয়ে এলাম। অনেক দূর যাবো;

এইমাত্র নেমেছে রোদ্দুর

আর অক্সিজেনে যতটুকু ধূলোর প্রতিভা ছিলো

সব ফুসফুসের পতিতপল্লীতে জড়ো করে

আমরা সবাই প্রথমে এসে নামলাম

অলৌকিক সন্দ্বীপে।…

আসতে পথে বুনো হাওয়ায় গত বছরের

নিহত রাত্রির সাথে দেখা হয়েছিলো;

আমার দিকে সে ছুঁড়ে দিয়েছিলো

গোপন চোখের কর্দমা আর নিষিদ্ধ প্যামফ্লেট-

আমি এবারের শীতে

কিছু বনমোরগের আবাদ করবো,

কাশ্মিরী আপেলের গায়ে

লিখে রাখবো হেমন্তের শূন্যতা-

                                 বলে কিছুতেই আর

গা করিনি।

 

কাঁচপুর ব্রীজ পার হয়ে এলাম

অ নে ক দূ র-!

আমরা তবু যাওয়ার ব্যাপারটা

দন্তস্য কে ঠিক ঠিক জানাতে পারিনি!