পুঁটকী ফাটা গরম পইড়েচে এবার! আর এই গরমে সুস্থির হইয়ে বইস্তে চালি কোতায় যাতি হবে ঢাহা শহরের মদ্দি কও দিনি? পার্কগুলোনরে তো তোমরা হাপিশ কইরে ফেইলেচো। আর আর যে সকল বিনোদনের ব্যবস্থা বানায়ে রাখিছো, তাতে তো আমার মতন ঢ্যামনারা মোততেও বসে না। তালি বাকি থাইকলো কী কতি পারো? বাকী থাইকলোতো শুদু সংসদ ভবন। বিশ্ব বিখ্যাত একটা বিল্ডিং, নাকি যে বিল্ডিংটার নকশা কইরেচিলো সে বিশ্ববিখ্যাত? আর কতো কী বিশ্ববিখ্যাত আছে আমাদের কলজের ভিতরে? লিস্টি দিতি গেলি তো রোদ ম্যালা পইড়ে যাবেনে। তবু যাই কও বাপু, এমন দরজা ছাড়া বিল্ডিং নজরুল ইসলাম আর দেখেনি। অবশ্য দরজা একদম যে নেই তাই-ই বা বলে কী করে? বাইওে থেকে দেকা যায় না ঠিকই। প্লাজা ঘুরে নিচের সুরঙ-রাস্তায় সেঁদিয়ে গেলে হোলের তলায় এন্ট্রেস আছে। তবে ঐসব রাস্তা তার মতো ক্লাশছাড়া লোকজনদের জন্য তো নয়ই, এমনকি তার নাম নিয়ে জাতীয় কবি নিজে এসেও যদি এস্ট্যান্ডআপ হয়ে থাকেন তাহলেও খুব একটা কাজ হবে বলে মনে হয় না। বলবীর- বললিই এখন আর বীরের অবাব হবিনানে। কাটারাইপেল নে হাজির হবেনে সোনার, হীরে আর চাঁদের টুকরো সব সোনামনিরা। তখন তোমার মতো ঝাকড়া চুলের বাবরি দোলায়ে আর কাজ হবিনানে বাপ। আগে এন্তার জবাবদিহি কত্তি হবে যে, সে এখানে এইয়েছিলো অবশ্যই নয় একটি নতুন বিদ্রোহী কবিতা লেখার জন্যি!
নাম: নজরুল ইসলাম
বয়স: ৪৮
সাকিন: সাতক্ষীরা জেলার অমুক উপজেলার দোন-ধোয়া খালের পাড়ে
পেশা: বান্দর খেলা (দেখানো)
উচ্চতা: ৩ ফুট সাড়ে ইঞ্চি
এই উচ্চতাটাই তাকে গাড্ডায় ফেলে দিয়েছে। বেশি লম্বা লোক যা হোক তবুও একটু কোলকুঁজো হয়ে বা নুয়ে বাঁকিয়ে হেঁটে নিজের দুই এক ইঞ্চি কমাতে পারে। কিন্তু তার মতো বাঁটকুলুদের সামনে কোন অপশনই রাখেননি পরওয়ারদেগার। তাই এখন আর এই বয়সে লম্বা হবার কোন আশা না করে বরং মাথা উঁচু করেই সে হাঁটে। কিন্তু হাঁটলে কি হবে? তার মাথা অন্যের কোমর পর্যন্ত যায়। ফলে খুবই হাস্যকর লাগে দেখতে। তাকে মিলিটারী মেজাজে গম্ভীর মুখে হাঁটতে দেখলেও প্রথমত বাচ্চা পোলাপান আর পুলিশেরা শুরু করে যন্ত্রণা। টোকাইদের যন্ত্রণা তবু সহ্য করা যায়। কিন্তু পুলিশগুলোর মুখ না জানি খাটা পায়খানা। নাম ধাম কিচ্ছু না, ওকে দেখলেই ডাক পারে- ওই মাদারচোদ, এদিক আয় হাউয়ার নাতি! আর তাকে দেখলেই শালাদের কোন না কোন কাজ মনে পড়ে যাবে। একবার এক শালার রাজা কনডম পর্যন্ত কিনে এনে দিতে হয়েছিলো। কেনরে শালা? গাড় মারাবি তুই, আর ন্যাকড়া নে আমারি ঠায় দাঁড়ায়ে থাকতি হবি কি জন্যি? নজরুল ইসলামের মেজাজ যে কী পরিমাণ গরম, তা বোঝা যাবে শুধু তার কাঁচাপাকা জুলপি বেয়ে ঘামের স্রোতের বহর দেখে। এই গরমে কার না মেজাজ তাতে? আর ঢাহা শহরের বাড়িওলাদের তেল কী রকম বাড়িছে দিন দিন খেয়াল করিচো? দেখলে হাগা বন্ধ হয়ে যায়। উরিব্বাপ! তিনতলার ফাউন্ডেশনে আঠের তলা তুলতেও শালাদের কোন বিকার নেই। বাপদাদার নাম নাই ট্যামগোপালের নাতি! খেয়াল করো, এই গরমের মদ্দে ইটা বালি সুঁড়কি সিমেন্ট সিফটিন বাটালি হাতুড়ি ক্রাশার…তো এই গরমে নজরুল ইসলাম জাতীয় প্রাণীদের বাঁচার- আর জীবন ধারণের (বাঁচে যারা সবাই তারা জীবনধারণ করে না, আর যারা জীবনধারণ করে আছে… থাক থাক বাপ, তোমাকে আর এই ধূলার দুপুরে দার্শনিকতা করি নাম কামাতে হবে না!) একমাত্র পথ হলো জাতীয় সংসদ ভবন! আর তাই নজরুল ইসলাম সন্দে হলেই রাইতের বেলায় বান্দর খেলা দেখায় সংসদ ভবনে। তার সাথে একটা হাড় জিরজিরে সিড়িঙ্গে গোছের বান্দর। আরেবাহ্, বান্দরতো মাস্ট। নাকি তোমরা চাও নজরুল ইসলাম নিজেই বান্দর হয়ে খেলা দেখিয়ে সবাইকে বিনুদোন করুক? তা বাবা সেইসব দিন কি আর আছে? সংস্কৃতি নাকি এখন আকাশের দখলে। কার বাড়িতে কী রান্না হচ্ছে সব চলে যাচ্ছে চ্যানেলে চ্যানেলে। কোনোকিছু চাপায়ে রাখার জো নেই। তা কোনো মদনকে তো দ্যাকলাম না নজরুল ইসলামের মতো একজন প্রোতীভাধড়, স্বোপার্জিত বান্দর খেলোয়াড়কে নিয়ে স্টোরি করতি। অন্তত কোনো না কোনো টকশোতে তো কমপক্ষে এটলিস্ট বান্দরের একটা ইন্টারভিউ নেয়া যেতো! যা চলছে আজকাল! বান্দর অন্তত তার চেয়েও খারাপ কিছু বলতো না। তবে একটা সমস্যা হতো এক্ষেত্রে। এক চ্যনেলে এক ধারায় কথা বলে ফির আর এক চ্যানেলে অন্য কথা বলতে পারতো না এই বান্দর। যদিও দেখলেই বোঝা যায়, শালা শয়তানের সাত নম্বর দাদাভাই! কিন্তু ব্যাটা চলে পাতায় পাতায়- নজরুল ইসলাম কে তুষিয়ে। এ যাবৎ সতের বার নজরুল ইসলাম এই কুজাতটাকে বাড়িছাড়া করেছে। প্রতিবছরে একবার করে। কিন্তু হারামিটা যায় না, আবার ফিরে আসে। খামশি খেয়ে পড়ে থাকে। মাঝে দু একবার অতিষ্ট হয়ে নজরুল ইসলাম নিজেই বান্দরকে ফাঁকি দিতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। শয়তানের দাদাভাই ঠিক ঠিক গন্ধে গন্ধে হাজির হয়ে ধরে ফেলেছে তাকে। ধরি ফেলিচো? ও আমার নাঙ চোদানী তোমার জন্য আমার জীবন চলি গেলো শালী, তবু তোর হাত দে নিস্তার নেইকো ঢংমারানি। ওরে আমার কুলাঙ্গারের শনির আখড়া…! এই জন্নিই তোরে আমি পেটে ধরিনি। তোর মতোন বান্দর জর্ম দিতি পাল্লি আজ কি আমার বাটকুলু হইয়ে থাকতি হতো? কেবল আফসোস করে নজরুল ইসলাম। এই শালীর বান্দরের জন্যি তার কিছুই করা হলো না। আর এখন একমাত্র উপার্জনের পথ এই বান্দর। শালী সেটা বোঝে, কিন্তু তারপরও ওর জন্যে মায়া মহব্বতে কম নাকাল হতে হয়নি। এবং ভবিষ্যতে আরো কতো নাকানি চোবানি কপালে আছে কে জানে? অপ্রচলিত হলেও কথাটা সত্যি যে নজরুলের জিবনেও পেরেম এইসেচিলো। তা তার হবু প্রেমিকা প্রথমেই শর্ত জুইড়ে দিলো: ওই বান্দররে বন্দরে ফেলাইয়া তারপর আহো বেপারি। দুইজন মিল্লা রোজগার করমু, তুমি খদ্দের ডাইক্কা আনবা আর আমি… বান্দর রাখোন যাইবো না কইলাম। রান্দর দেকলে আমার শইল কাঁপে ডরে! বাইরের আপামর ভদ্রসমাজ এসব ঘটনার কিছুই জানে না। বান্দরের ইতিহাস নিয়ে নজরুলের ঝুলিতে কিছু ভালোমানুষ টাইপের নির্দোষ উত্তর আছে। যেমন কেউ যখন জিজ্ঞেস করে:
– এই বান্দর পাইছো কই? উত্তর: আল্লায় দিচে। সাত দিন আগে অগেরে আমি কিনিচি হাটেরত্থে…
– কত দামে? উত্তর: বারোশো টাহা দরে
– কয়টা খেলা পারে বান্দর? উত্তর: সতেরটা খেলা দেহাতি পারে
– কে শিখাইছে এই খেলাগুলান? যার কাছ থিকা কিনছো, সে? উত্তর: না। সেই মুনিব শিখায়েচিলো তিনচাইরডে, বাকীগুলোন আমার হাতে পইড়ে শিখেচে বাবা। আসলি, কদিন গেলি ও আরো বেশি খেলা শিকতি পারবি। (কচু! সতের বছর থেকে এই বান্দরকে ৪/৫টার বেশি খেলা শেখাতে পারেনি নজরুল ইসলাম। বরং তার নিজের আচরণের মধ্যে বান্দরের কিছু ’ফরমুলা’ ঢুকে গেছে। কিন্তু এমুন এমুন বললি মানুষের সিমপ্যাথি বাড়ে, জানে সে।)
– ও, তাইলে তুমিওতো কম বান্দর না! নাম কি বান্দরের? উত্তর: টাইগার! নজরুল ইসলাম এমন হুড়ুম মেরে নামটা বলে যেন সে নিজেই হুালুম করে এখনি কারো ঘাড়ে লাফিয়ে পড়েেত জানে কিন্তু নেহাত করুণাবশত পড়ছে না।
– তা দেখাও দেখি তোমার বান্দর কী খেলা পারে দেখি…
নজরুল ইসলাম তখন হাতের লাঠিটা দিয়ে মাটিতে জোরে শব্দ করে আঘাত করে। মুখ দিয়ে কুৎকুত আওয়াজও তোলে একসাথে। এই শব্দে বান্দর কিছুটা বশে থাকে। শালা শয়তানের দাদাভাই ঠিক বোঝে এখন রোজগারের সময় বাতেলা করলে চলবে না। মেজাজ বুঝে নজরুল ইসলাম যেমন বলে, তাই করার চেষ্টা করে। কিন্তু পাবলিকের আনন্দ পাওয়ার বা গ্রহণ করার আগ্রহ সীমাহীন। কিসে যে সে আনন্দিত হবে তা একমাত্র সে-ই জানে। কখনো বান্দর পেটানো দেখে মজা পায়। আবার কখনোবা মানুষকে বান্দরে পেটাচ্ছে- সেটা দেখেও তার আমোদ। আর এই সব আমোদ প্রমোদের ক্যটালিস্ট হিসেবে টাইগার যখন তার কাঙ্খিত আচরণ করতে ব্যর্থ হয়, পাবলিক তখন হই হই সোরগোল করে ওঠে। তখন দিগি¦দিক জ্ঞানশূন্য হয়ে নজরুল ইসলাম তার সাড়ে তিনফুঠি শরীরটা নিয়ে জাম্বুবানের মতো লাফিয়ে পড়ে বান্দরের পিঠে এলোপাতারি লাঠির ঘা বসিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে পিঠ কেটে রক্তও বের হয় তাতে। হায়, নজরুল ইসলামের যদি পাভলভের এনিমেল সাইকোলজি পড়া থাকতো!
তবে এ ধরনের ঘটনা খুব বেশি একটা ঘটে না। কেননা বান্দর খেলা দেখার লোক কৈ? সব শালাই তো বান্দরের মত দৌঁড়োচ্ছে। ঢাকাশহর কখন জিরোয় বলতি পারো? তারপরও এই সংসদ ভবনে দুপুরের পর থেকেই কিছু লোকজন হাওয়া খেতে আসে। তখন অবশ্য চড়া রোদ। সবচেয়ে ভীড় হয় আসেপাশের অঞ্চলে লোডশেডিং হলে। পয়েন্ট টু বি নোটেড- কিছু শখের ডাকে সাড়া দেবার জন্যি মেয়েমানুষদের আনাগোনা – যদি চোখ থাকে তো দেখতে পাবে। আবার বাজার গরমে, রাজনীতির গরমে আর ঘামের আরামে অতিষ্ট যারা, তারাও আসে তাতানো মেজাজ ঠান্ডার আশায়। মানুষগুলো তখন ছায়া ছায়া। সেই ছায়া মানুষগুলো তখন কী করতো যাদি না নজরুল ইসলামের মতো শখ-প্রশমনকারী না থাকতো। কেউ কেউ গায়ের জামাটা আধখোলা করে শরীরটা ঠান্ডা করার অছিলায় ঠ্যাং ছড়িয়ে কংক্রিটের মেঝেতে বসে। কেউবা ঘাসে বসে ঘাসের বারোটা বাজায়। (এই ঘাস লাগানোর টেন্ডার কেমন করে হয়, তা কি তারা জানে?) কিন্তু সিঁড়িতে কেউ বসে না। বসতে গেলেই আনছার ভাইয়েরা সিটি বাজায়। সিকিউরিটি ম্যাটার বলে এখানে সর্বসাধারণের বসা নিষেধ। তা বাবা নজরুল ইসলাম তো সর্ব-অসাধারণ। তাকে বসতি দিতি চাও না কিজৈন্যে? তোমরা আসোলি নজরুল ইসলামের মর্ম বুঝতি পাল্লি না। এই দ্যাহো, আমার টাইগার কী কী দেহাতি পারে। হা, তা দেখাও তো আমার রাজা বাপধন, সাদ্দামের সৈন্ন কী করি বুশের পেলেন ধংশো কইরলো? (বান্দর তখন ক্ষেপণাস্ত্র মারা ভঙ্গী করে!) সাব্বাস, তা পুঁইশাকের ডাঁটা নিয়ি নাতিজামাই বাড়ি যাতি হবি ছাইকেল চড়ি, দেখাও তো বাপা। ও বাপ, ছাইকেলে আমাকেও নিতি হবি (নজরুলের গলায় আহ্লাদ গলে গলে পড়ে)। ও মা রাগ হইয়েচে! ছাইকেলে সে নেপে না কাউরি, একা যাবি। (বলতেই বান্দর শালা লাঠিটাকে নিজের পেটের তলে সোজা করে নিয়ে পা দিয়ে প্যাডেল মারার ভঙ্গী করে)। তারপর ছাইকেলে চড়ি মাঝরাস্তায় একসিডেন হয়ি পড়ি গেলা তুমি! (বান্দর এখন তিনদিনের বাসি মড়ার মতো স্পিকটি নট্) ও বাপা, কী হইয়েচে তোমার? এড়ি গেচো? (নজরুলের গলায় কান্নার সর্দি জমে)। আহারে আমার রাজা বাপধন, ওঠো ওঠো, এম্বুলেন্সে খপর দিতি হবিনানে? (বান্দর ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে এম্বুলেন্সে খবর দিতে যায়)। হা, ছিরিকিশনো কী করি ননীচুরি কইরলো দেখাও তো বাপ। – হইয়েচে। এবার দেকপেন আট তারিখে জনগনের শোতরু এরশাদ সিকদার কী কইরে ফাঁসিতে ঝুইলচে। বলে বান্দরের গলায় বাঁধা দড়ি ধরে নজরুল ইসলাম হ্যাঁচকা টানে উপর দিকে টেনে তোলে। যেনো এভাবেই সে একদিন এই কুজাতটাকে একদম শেষ খেলা দেখিয়ে ছাড়বে। কিন্তু বান্দর চালাক আছে। বড়শীর মত আঙুলগুলো দিয়ে ঝট করে সে ঝুলন্ত দড়িটা দুহাতে ধরে ফেলে। পাবলিক হই হই করে ওঠে। ওই মিয়া, মইরা যাইবো তো বান্দরে। শালা কষাই। ওই মাদারচোদ তোর মায়েরে বাপ। এরশাদ সিকদাররে লইয়া কী কইতাচোস। চারদিকে যে আরো কতো খুনী আছে দেহস না? দেন ভাই, যে যা পারেন দেনÑ খেলা দেখাইয়া রোজগার করে ভাই, চুরি চামারিতো করে না। দেখছেন তো ভাই সাইজ। বান্দরের লাহান। ও এইটা না করলে কে দেখাইবো বান্দরের খেলা? জনৈক প্রশ্ন করে- তুমি কি মিয়া শুদু এই সংসদ ভবন চত্তরেই বান্দর খেলা দেখাও। হ। যায়গা একটা বাইছা লইছো ভালোই। এইখানেই জমে ভালো! আরো একদিন দেখছি তোমারে, নাচন কোন্দন চালাইতাছো…. কিন্তু তোমার চাইতে অনেক ভালো নাচন কোন্দন জানে – যারা ভিতরে থাকে- বলে আলগোছে বিখ্যাত বিল্ডিংটাকে সই করে কিনা, আবছা আলোয় তা ঠাহর হয় না। কিন্তু অপ্রয়োজনীয়, অযাচিত, অপরিপক্ক কথার ভেতরেই তারা উদয় হয়। জনা তিনেক সংসদ পুলিশ। এরা চত্তরের নিরাপত্তা ও সিকিউরিটি কনসার্ন। পদাধিকার বলে সংসদের দেহরক্ষী কাম গার্জেন। এসেই তারা প্রথম সবক দেয়। ওই মাদারচোদ, কতো ইনকাম করলি আইজ হাউয়ার নাতি? নজরুল ইসলাম এই ভয়টাই করছিলো। এদের হাতে পড়লি আর ইনকাম নে বাড়িতে যাতি হবিনানে। সে ফিকির চিন্তা করে। ভং ধরে তিনটাকা এগিয়ে দেয় ওদের দিকে। রিএ্যাকশন হয় মারাত্মক। তারা কোন সুযোগ না দিয়ে নজরুল ইসলামের হাতের বান্দর-পেটানো লাঠিটা কেড়ে নিয়ে বান্দরের সাইজে ঠায়-ঠাস গোটাকয় বারি বসিয়ে দেয়। নজরুল ইসলাম ইরিব্বাপ বলে এমন একটা লাফ দেয় যেন সে কোনরকম জেটফুয়েল ছাড়াই আকাশে উড়ে যাবে। চোখের নিমেষে লম্বা কালসিটে পড়ে যায় তার পিঠে। যা ঢাকা থাকে ঢাকাশহরের অসংখ্য অসফলতার মতো কংক্রিট কফিনে। নজরুল ইসলামের এখন শীত লাগছে। আরে, অসময়ে মাঘ মাস ফলে উঠলো নাকি? হাইবাপ কী হলো কওদিনি? কী করিচি আমি, ছার?
– বান্দর নিয়া পার্লামেন্টে ঢোকা নিষেধ। তার উপরে রাইতের বেলা, হারামজাদা, তোর আইজকা খবর আছে। বাইরকর তোর সারাদিনের ইনকাম। বড় ছার আইজ এমনিতেই খেইপা আছে। এমপি হোস্টেলের পিছ্নের জানলা দিয়া নৌকায় পাড় হইতে গিয়া এক মক্ষিরানী পানিতে পইড়া গেছে। আইজ তোর বারোটা বাজামু হাউয়ার নাতি।
আরে কি মুশকিল, এইসবের মধ্যে নজরুল ইসলাম কেমনে ঢুকে গেলো? সে তো বান্দর নিয়া ঘোরে: মাগীর দালালিতো করে না। কিন্তু তাতে কি, জোরপূর্বক হলেও তাকে এই ঘটনার মধ্যে ঢোকানো হবে। এবং ঢোকানোর পর কাহিনীর কী দশা হয় তা আপনারা দেখতে পাবেন। আগামিকালের পত্রিকাগুলোতে একবার চোখ বুলালে কিংবা লেটনাইট টিভি কভারেজে দেখতে পাবেন সোম্বাদিক ভায়েরা যে নিউজ এনালাইসিস করে কিংবা ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কোনো টক-মিষ্টি-শো র টপিক হিসেবে এক বান্দর কাহিনী ঢুকে পড়াটা অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু তাই বলে আপনাদের এহেন লোডশেডিংয়ের ভেতরে, অকার্যকর সংসদীয় চত্তরে বেমালুম ফেলে রেখে আমি তো ডুগ্গি দিতে পারি না। কাহিনীকে তো অন্তত একটা সম্পৃক্ততার যায়গায় নিয়ে যেতে হবে। তো গেহেরি বাত ইয়ে হ্যায় জনাব, নজরুল ইসলামকে ওইভাবে আগাপাশতলা মার খেতে দেখে সতের বছরের সহচর বান্দর আচমকা লাফিয়ে পড়ে সিকিউরিটি স্টাফদের কাঁধের ওপর উপর্যুপরি হিসি করতে থাকে।
বাপরে বাপ! বান্দরের মুত বলে কথা। কতদিন এর গন্ধ বয়ে বেড়াতে হবে বলা মুশকিল!